বুধবার, 30 জুলাই 2025
MENU
daily-fulki

অগ্নিদগ্ধ হওয়ার সময় মানব শরীরে ঠিক কি ঘটে?

ফুলকি ডেস্ক : অনেক চিকিৎসাবিদদের মতে আগুনে পু'ড়ে যাওয়া মৃ'ত্যু মানুষের জন্য সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতার একটি। এর গভীরতা বোঝা যায় তখনই, যখন আগুনের তাপে ত্বকের একের পর এক স্তর, মাং'সপেশি এবং স্নায়ু কোষ ক্ষতি'গ্রস্থ হতে থাকে। সম্পূর্ণভাবে জ্ঞান হারা'নোর আগ পর্যন্ত এই যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকে। তবে একটা সময় পর আর এই ব্যথার অনুভূতি থাকে না কারণ স্নায়ুর সঞ্চালন ক্ষমতা আগুনে পো'ড়ার কারণে নষ্ট হয়।

আগুনে পোড়ার ধরন সাধারণত চারটি স্তরে ভাগ করা হয়। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ডিগ্রি বার্ন। প্রথম ডিগ্রি বা'র্ন এর ক্ষেত্রে কেবল ত্বকের উপরিভাগ অর্থাৎ এপিডার্মিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে চামড়ায় একটুখানি লালচে ভাব এবং হালকা ব্যথা অনুভূত হয়। তবে এটা সাধারণত দ্রুত সেরে যায়। এই অভিজ্ঞতা মোটামুটি সবারই আছে। আর দ্বিতীয় ডিগ্রি বা'র্নে আগুন ত্বকের নিচের স্তর ডার্মিস অবধি পৌঁছায়। এসময় ফোসকা পড়ে, প্রচণ্ড জ্বা'লা হয়। কারণ এই স্তরে তখনো স্নায়ু সক্রিয় থাকে।

ভয়াবহতা শুরু হয় তৃতীয় ডিগ্রি বা'র্ন থেকে। এই পর্যায়ে ত্বকের এপিডার্মিস ও ডার্মিস উভয় স্তরই পু'ড়ে যায়। অনেক সময় নিচের চর্বিও ক্ষতি'গ্রস্ত হয়। আক্রান্ত অংশ  দেখতে কখনো সাদা, বাদামি বা কালো রঙের হয়। কিন্তু অদ্ভুতভাবে এই ধাপে অনেক রোগী ব্যথা টের পাননা, কারণ সংবেদন রিসেপ্টরগুলোও পু'ড়ে গিয়ে নি'স্ক্রিয় হয়ে পড়ে। ফলে শরীর ব্যথার সংকেত মস্তিষ্কে পাঠাতে পারে না।

সবচেয়ে মারাত্মক হলো চতুর্থ ডিগ্রি বার্ন। তখন আগুন ত্ব'ক ছাড়িয়ে গিয়ে পেশি, টেন্ডন এমনকি হাড় পর্যন্ত পৌঁছায়। পোড়া অংশটা তখন অনেকটা কালচে, কাঠকয়লার মতো হয়ে যায়। এই অবস্থায় সেই জায়গায় কোনো অনুভূতি আর থাকে না। এমনকি র''ক্ত চলা'চলও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

পাশাপাশি আগুনে পো'ড়ার ফলে শরীর থেকে বিপুল পরিমাণে তরল বেরিয়ে যায়। ফলে পানিশূন্যতা দেখা দেয়, রক্তচাপ কমে যায় এবং কি'ডনি কাজ ব'ন্ধ করে দিতে পারে। এই অবস্থাকে বা'র্ন শক বলা হয় যা জীব'নহানির বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

তৃতীয় ও চতুর্থ ডিগ্রির বা'র্নে মৃ'ত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি। তবে সেটা নির্ভর করে পোড়ার স্থান, মাত্রা, রোগীর বয়স এবং কত দ্রুত চিকিৎসা শুরু হয়েছে তার ওপর। অনেকেই বিশাল ক্ষয়'ক্ষতির মধ্যেও বেঁচে ফেরেন শুধুমাত্র দ্রুত এবং সঠিক চিকিৎসার জন্য।

ত্বক আমাদের শরীরের সবচেয়ে বড় প্রহরী। কিন্তু আগুনে পু'ড়ে যাওয়ার পর এই প্রাকৃতিক সুরক্ষা স্তর ভেঙে যায়। ফলে ইনফে'কশনের ঝুঁকি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায়। ব্যাকটেরিয়া সহজেই শরীরে ঢুকে পড়ে এবং গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

যারা বড় ধরনের বা'র্ন সারভাইভর, তাদের অনেকেই পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রে'সে ভোগেন। আয়নায় নিজেকে দেখা, সমাজের দৃষ্টি'ভঙ্গি সবকিছু মিলিয়ে মানসি'কভাবে ভেঙে পড়েন অনেকে। তাই বা'র্ন ট্রিটমেন্টে শুধু ওষুধ বা অ'স্ত্রোপ'চার নয়, মানসিক সহায়তাও জরুরি।(বিজ্ঞান্বেষী)


News Writer

SB

সর্বাধিক পঠিত