বুধবার, 30 জুলাই 2025
MENU
daily-fulki

‘আলী’ শুধু সিনেমা না, এটা আমার জীবনের অংশ হয়ে গেছে: ইরফান

ইরফান সাজ্জাদ। অভিনেতা ও মডেল। নিজের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। উপহার দিয়েছেন একাধিক নাটক ও সিনেমা। শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে এই অভিনেতার নতুন সিনেমা ‘আলী’। এই সিনেমা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলেছেন তিনি–

আপনার অভিনীত ‘আলী’ কেমন…
অটিজমে আক্রান্ত আলী নামের এক ব্যক্তি ও তাঁর বোনের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে সিনেমাটি। অ্যাকশনের পাশাপাশি এই সিনেমায় নির্মাতা তুলে ধরেছেন ভাইবোনের ভালোবাসা। বলা যায় দুই ভাইবোনের ইমোশনই আলী সিনেমার প্রাণ। এটি একটি বাণিজ্যিক সিনেমা হলেও এর নির্মাণশৈলী বেশ পরীক্ষামূলক। সিনেমায় আলী একজন বাকপ্রতিবন্ধী। এই চরিত্রে আমি অভিনয় করেছি। ফলে পুরো সিনেমায় আমাকে সাইন ল্যাঙ্গুয়েজে কথা বলতে হয়েছে। এটি আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। বলা যায় সিনেমাটি শুধু একটি প্রজেক্ট ছিল না, এটি আমার জীবনের একটি অংশ হয়ে গেছে। আলী চরিত্রটি এমন একটি জায়গায় নিয়ে গেছে আমাকে, যেটি আমি আগে কখনও ছুঁইনি। আলী আমার কাছে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং চরিত্র ছিল। 

কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন চরিত্রটির জন্য?
প্রস্তুতির কথা যদি বলেন, ২০২৩ সালের শুরুতে সিনেমাটি নিয়ে নির্মাতার সঙ্গে আমার কথা হয়। এরপর আমি চার মাস সময় নিয়েছিলাম শুধু এই চরিত্রটি বুঝতে। বিভিন্ন অটিজম সাপোর্ট সেন্টারে যেতাম, অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলতাম, চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ করতাম। এমনকি একজন সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রেইনার নিয়েছিলাম আলাদাভাবে। কারণ, পুরো সিনেমায় আমাকে কোনো ডায়ালগ নয়, ইশারায় কথা বলতে হয়েছে। সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ শিখে সংলাপ প্রকাশ করা–এটি সত্যিই অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এরপর ২০২৩ সালের জুলাইতে যখন সিনেমার দৃশ্যধারণ শুরু হয়, তখন পর্দায় আলী হয়ে উঠতে কোনো ছাড় দিইনি। চেষ্টা করেছি, দর্শক আমাকে সব সময় যেভাবে দেখেছেন, সেই লুকটা থেকে বের হয়ে আসতে। 

চরিত্রটি কি আপনার ব্যক্তিজীবনে কোনো পরিবর্তন এনেছে?
অবশ্যই। আগে আমরা অনেক কিছু বুঝি না, বা বুঝেও এড়িয়ে যাই। কিন্তু এই সিনেমা আমাকে শিখিয়েছে–প্রত্যেক মানুষের অনুভবের ভাষা আলাদা হতে পারে, কিন্তু অনুভবের গভীরতা আলাদা নয়। এখন আমি অনেক বেশি সংবেদনশীল হয়ে গেছি, বিশেষ করে যারা ‘ভিন্ন’ বলে সমাজে বিবেচিত–তাদের প্রতি।

দর্শক প্রতিক্রিয়া কেমন লক্ষ্য করছেন?
এখন পর্যন্ত যারা দেখেছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই আমায় জানিয়েছে তাদের ভালোলাগার কথা। যেহেতু এটি আপামর জনসাধারণের গল্প। তাই সবাই গল্পের সঙ্গে একাত্ম হতে পারছেন। 

‘আলী’ সিনেমায় দর্শকের জন্য কোনো বার্তা আছে?
অবশ্যই। আমরা অনেক সময় সমাজে কিছু মানুষকে ‘ব্যতিক্রমী’ বা ‘অক্ষম’ বলে দাগিয়ে দিই। ‘আলী’ তাদের চোখ দিয়ে আমাদের দেখতে শেখায়। এই সিনেমা বলে ভিন্নতা দুর্বলতা নয়, বরং সেটিই একেকজনের শক্তি হতে পারে।

নির্মাতার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
বিপ্লব হায়দার খুবই সংবেদনশীল একজন নির্মাতা। তিনি শুধু ক্যামেরার চোখে গল্প বলেন না, গল্পটি যেন আমাদের ভেতরে ঢুকিয়ে দেন। তিনি আমাকে সময় দিয়েছেন, জোর করেননি। ওনার একটি কথা মনে আছে ‘ইরফান, অভিনয় করো না, আলী হয়ে ওঠো।’

ভবিষ্যতে এমন ধরনের চরিত্রে আবার অভিনয় করবেন?
যদি এমন চরিত্র আসে, যা আমাকে আবার নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে, নিজেকে ভাঙচুর করে গড়তে হয়। তাহলে অবশ্যই করব। কারণ, আমি বিশ্বাস করি, একজন অভিনেতার প্রতিদিন জন্ম নেওয়া উচিত।


News Writer

SB

সর্বাধিক পঠিত