স্থূলতার কারণে চোখের যে রোগগুলো হতে পারে :
১. ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি
স্থূলতা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের অন্যতম প্রধান কারণ। ডায়াবেটিস হলে রেটিনার ছোট রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে রক্তক্ষরণ ও দৃষ্টিহানি হতে পারে।
- চোখে ঝাপসা দেখা
- অন্ধকার বা কালো দাগ দেখা
- রাতের বেলায় কম দেখা
২. গ্লকোমা
স্থূলতার কারণে চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ বেড়ে যেতে পারে, যা গ্লকোমার ঝুঁকি বাড়ায়। গ্লকোমা হলে অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এটি স্থায়ী অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ।
লক্ষণ
- ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া
- চোখের সামনে টানেল ভিশন (কোণার দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া)
- চোখে ব্যথা ও লালচে ভাব
৩. বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন
স্থূলতা রেটিনার ম্যাকুলা তে চর্বি ও টক্সিন জমার হার বাড়িয়ে দেয়, যা বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এটি সাধারণত ৫০ বছরের পর বেশি দেখা যায়।
লক্ষণ
- মাঝখানের দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়া
- সরল লাইন বাঁকা দেখা
- বই পড়তে বা মুখ চিনতে সমস্যা হওয়া
৪. চোখের স্ট্রোক
স্থূলতার কারণে উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল বেড়ে যায়, যা চোখের রক্তনালিতে ব্লকেজ তৈরি করতে পারে। এতে চোখের স্ট্রোক হতে পারে, যা হঠাৎ করে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দিতে পারে।
লক্ষণ
- হঠাৎ করে এক চোখে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া
- চোখের সামনে অন্ধকার বা ছায়া দেখা
- ব্যথাহীন কিন্তু দ্রুত দৃষ্টিহানি
৫. চোখের শুষ্কতা
স্থূলতার সঙ্গে অধিক চর্বি ও শর্করা গ্রহণ জড়িত, যা চোখের অশ্রুগ্রন্থি ঠিকমতো কাজ করতে না দেওয়ার ফলে ড্রাই আই সিনড্রোম সৃষ্টি করতে পারে।
লক্ষণ
- চোখে জ্বালাপোড়া
- সব সময় চোখ শুষ্ক অনুভব হওয়া
- আলোতে সংবেদনশীলতা
স্থূলতা কমিয়ে চোখের সুস্থতা বজায় রাখার উপায়
- স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা
- ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
- ধূমপান ত্যাগ করা
- চোখের নিয়মিত পরীক্ষা করানো, যদি স্থূলতা থাকে, তাহলে বছরে অন্তত একবার চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে যান
- চোখের আর্দ্রতা ধরে রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করা।

চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন,
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
শেরেবাংলানগর, ঢাকা।