তাঁর হাতে বাংলাদেশের পাসপোর্ট। ছাড়পত্র মেলেছে ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এবং ক্লাব লিস্টার সিটি থেকেও। ফিফার প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটির ছাড়পত্র মিললেই বাংলাদেশের জার্সি গায়ে জড়াতে পারবেন হামজা চৌধুরী। এক মাসের বেশি সময় ধরে হামজা-সংক্রান্ত কাগজপত্র ফিফার সঙ্গে আদান-প্রদান করছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। কিন্তু তার পরও বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে মেলেনি কোনো সবুজ সংকেত। বরং লাল-সবুজের জার্সিতে হামজা চৌধুরীকে খেলানোর বিষয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা।
ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে খেলার কারণেই ফিফার প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটিতে আটকে আছে হামজার ফাইল। সমকালের কাছে এমনটিই জানিয়েছেন বাফুফে সাধারণ ইমরান হোসেন তুষার, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) হামজার বিষয়ে কিছু কাগজপত্র ফিফাতে পাঠিয়েছি। মূলত ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে খেলাতেই জটিলতা দেখা দিয়েছে। যদি অনূর্ধ্ব-২০ দলেও খেলত, তাতেও এত সমস্যা হতো না। এর বাইরে তাঁর নানির বিষয়ে জানতে চেয়েছে ফিফা। আমরা এই সংক্রান্ত ডকুমেন্টসগুলো পাঠিয়েছি। এখন তাদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।’
বাংলাদেশের ফুটবলের পোস্টারবয় জামাল ভূঁইয়া ডেনমার্ক প্রবাসী। তারিক রায়হান কাজীও ফিনল্যান্ড প্রবাসী। তাদের লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়ানোর প্রক্রিয়াটা অতটা জটিল ছিল না। জামাল ডেনমার্কের কোনো বয়সভিত্তিক পর্যায়ে খেলেননি। আর ফিনল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৭ দলের জার্সিতে খেললেও তারিককে নিয়ে খুব একটা ঝামেলা পোহাতে হয়নি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে। হামজার ব্যাপারটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ পর্যায়ে খেলা এবং ইংল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে মাঠে নামা। ২০১৮-২০১৯ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে ৭ ম্যাচ খেলেছিলেন ২৭ বছর বয়সী এ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। ইংলিশ লিগের সাবেক চ্যাম্পিয়ন লিস্টার সিটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন, জিতেছেন এফএ কাপও। খেলেছিলেন ইউরোপা লিগ ও পরের ধাপ কনফারেন্স লিগও। এমন সাফল্যমণ্ডিত গড়া ক্যারিয়ার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোনো ফুটবলারের অতীতে ছিল না।
তাই তো হামজার ছাড়পত্র দিতে একের পর এক ডকুমেন্টস চাচ্ছে ফিফার প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটি। তাঁর নানির বাড়ি হবিগঞ্জে। তাঁর নানির পুরো জীবন-বৃত্তান্ত সংগ্রহ করে সেটাও ফিফায় পাঠিয়েছে দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এত জটিলতা থাকলেও বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষারের বিশ্বাস, শিগগির ফিফা থেকে চূড়ান্ত ছাড়পত্র পাবেন, ‘হামজার মতো একজন বড় মাপের ফুটবলার যদি বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারে, সেটা তো অনেক বড় বিষয়। তাকে দেখে অন্য দেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরাও আগ্রহী হবে। এমনটা তো আমাদের ফুটবলের জন্য অবশ্যই ইতিবাচক। আমরা আশা করি, খুব শিগগির হামজার ব্যাপারে চূড়ান্ত সুরাহা ফিফা থেকে পাব।’