তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ডিএফপি’র মিডিয়া তালিকাভুক্ত ঢাকা জেলার একমাত্র স্থানীয় পত্রিকা

মানিকগঞ্জে ৫ বছরে চুরি ৪৪৬ ট্রান্সফার, আর্থিক ক্ষতি গ্রাহকের

- Advertisement -

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার কুমেরপাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত ট্রান্সফরমারটি গ্রামের পাশে ফাঁকা জায়গায় একটি খুঁটিতে টাঙানো ছিল। নির্জন জায়গা থেকে এ সরঞ্জামটি কয়েকবার চুরি হয়েছে। এতে করে গ্রামের মানুষকে বেশ কিছুদিন অন্ধকারে থাকতে হয়েছে। পরে নিজেদের টাকায় ট্রান্সফরমার কিনে তাঁদের বিদ্যুতের লাইন সচল করতে হয়েছে। একইভাবে পাশের গ্রাম মৈত্রীপাড়ার বাসিন্দাদেরও ট্রান্সফরমার চুরি যাওয়ায় কয়েকবার ভোগান্তি ও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।

সরবরাহ করা তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মানিকগঞ্জের সাত উপজেলাসহ ঢাকার ধামরাইয়ের কয়েকটি গ্রাম থেকে ৪৪৬টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এগুলোর দাম ২ কোটি ৪৮ লাখ ৫৯ হাজার ৩২৫ টাকা। এসব আবার স্থাপনের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৬৪ হাজার ৬১৮ টাকা। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ভর্তুকি দিয়েছে ৫৯ লাখ ৭৬ হাজার ৬৫৯ টাকা।

রাধানগর মৈত্রীপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী বাবুল চক্রবর্তী বলেন, ‘গত দেড় বছরে আমাদের এলাকা থেকে দুবার ট্রান্সফরমার চুরি হয়। প্রথমবার অর্ধেক মূল্য ৫০ হাজার টাকা আমাদের দিয়ে ট্রান্সফরমার কিনে নিতে হয়। পরেরবার পুরো মূল্য বাবদ পল্লী বিদ্যুৎকে প্রায় ১ লাখ টাকা দিতে হয়েছে।’

একই রকম কথা জানালেন কুমেরপাড়ার ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া। তাঁদের ট্রান্সফরমারটিও দুবার চুরি হয়েছে বলে জানান তিনি। চুরি হওয়ার পর তাঁদেরও কিনে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হচ্ছে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সঙ্গে কাজ করেন এমন এক মিস্ত্রি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ দুই ভাগে বিভক্ত। একটি অংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। অন্য অংশের কাজ হচ্ছে লাইন স্থাপন করা। যাঁরা লাইন স্থাপন করে মূলত তাদেরই একটি অংশ ট্রান্সফরমার চুরির সঙ্গে জড়িত।

এ নিয়ে কথা হলে মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. সুলতান নাছিমুল হক বলেন, ট্রান্সফরমার বেশি চুরি হয় গ্রামাঞ্চলের নির্জন স্থান, বিশেষ করে সেচ প্রকল্প থেকে। বোরো মৌসুম শেষে যেসব গ্রাহক ট্রান্সফরমার নামিয়ে রাখেন না, সাধারণত সে সব ট্রান্সফরমার চুরি হয়ে থাকে।

চুরি রোধে সুলতান নাছিমুল বলেন, ‘আমরা গ্রাহকদের সচেতন করে থাকি, যাতে তাঁরা বোরো মৌসুম শেষে ট্রান্সফরমার নামিয়ে রাখেন। আবার মৌসুম শুরু হলে যাতে ট্রান্সফরমার তুলে নেন। আর যত দিন বোরো মৌসুম চলবে, তত দিন যেন পাহারার ব্যবস্থা করেন। গ্রাহকেরা আমাদের পরামর্শমতো কাজ করলে ট্রান্সফরমার চুরির হার অনেক কমে যাবে।’

কারা এ চুরির সঙ্গে জড়িত এবং কতজন চোরকে এ পর্যন্ত আইনের আওতায় আনা গেছে, জানতে চাইলে জিএম জানান, এ রকম কোনো তথ্য তাঁর কাছে নেই।

- Advertisement -

এ বিভাগের আরও সংবাদ