ফুলকি ডেস্ক : লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বিমান ও স্থল হামলা শুরুর পর গত ২৪ ঘন্টায় দায়িত্বে থাকা অন্তত ২৮ জন চিকিৎসাকর্মী নিহত হয়েছেন বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস অনলাইনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “অনেক স্বাস্থ্যকর্মী কাজে আসছে না। বোমা হামলার কারণে তারা যেখানে কাজ করে সেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।”
ইসরায়েলের বোমা হামলার কারণে লেবাননের বর্তমান পরিস্থিতি বেশ ‘কঠিন ও বিপজ্জনক’ উল্লেখ করে গেব্রিয়েসুস স্বাস্থ্যকর্মীদের শক্তিশালী সুরক্ষা ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ইসরায়েলের হামলার কারণে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা কঠিন হচ্ছে। ইসরায়েলের হামলায় বাস্তুচ্যুত হওয়ায় অনেক স্বাস্থ্যকর্মী কাজে যোগ দিচ্ছেন না। ফলে স্বাস্থ্যসেবায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
দক্ষিণ লেবাননে ৩৭টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি বৈরুতের বেশ কয়েকটি হাসপাতাল কর্মী ও রোগীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
লেবাননে ডব্লিউএইচও-এর প্রতিনিধি আবদুনাসির আবুবকর সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, গত একদিনে দায়িত্বে থাকা সব স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছে। তারা আহতদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছিল।
বৈরুত বিমানবন্দরে শাটডাউনের কারণে ডব্লিউএইচও শুক্রবার লেবাননে চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করতে পারেনি। আবদুনাসির আবুবকর সতর্ক করে বলেছেন, দেশের বেশিরভাগ স্বাস্থ্য সামগ্রী প্রায় শেষের পথে।
ওদিকে বৃহস্পতিবার লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফিরাস আবিয়াদ বলেন, গত তিন দিনে ৪০ জন অ্যাম্বুলেন্স ও অগ্নিনির্বাপক কর্মী নিহত হয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রাণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, লেবাননে গত এক বছরে ইসরায়েলের হামলার শুরু থেকে নিহত হয়েছে প্রায় ২ হাজার মানুষ। তাদের মধ্যে ১২৭ জন শিশু এবং আহত হয়েছে ৯ হাজার ৩৮৪ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, এর মধ্যে ৭৩ জন স্বাস্থ্যকর্মীও আছে। লেবাননে ডব্লিউএইচও-এর প্রতিনিধি আবুবকর বলেন, “হাসপাতালগুলো ইতোমধ্যেই খালি করা হয়েছে। সেখানে এখন কেবল হতাহতদের চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু সে ব্যবস্থাও শেষ সীমায় চলে যাওয়া এখন কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র।”