মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠের গভীরে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকতে পারে। লাল গ্রহে জীবনের সম্ভাবনা সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, ৩ বিলিয়নেরও বেশি বছর আগে, মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠে কেবল হ্রদ, নদীই ছিল বরং মহাসাগর ছিল– তবে গ্রহটির বায়ুমণ্ডলের চরিত্র হারিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে এগুলো অদৃশ্য হয়ে যায়। গ্রহের মেরুতে অবস্থিত পারমাফ্রস্ট বরফ এর প্রমাণ। আয়রন অক্সাইড যৌগ হেমাটাইটের সূক্ষ্ম গুঁড়োয় মুড়ে দেয়া আজকের গ্রহটাকে দেখে কারও সুদূরতম কল্পনাতেও আসে না তার অতীত। মঙ্গলের লাল ধুলোয় ‘ইনসাইট ল্যান্ডার’ নামে একটি বিশেষ যন্ত্র নামিয়েছিল নাসা। মঙ্গলের মাটির নিচে আদৌ পানি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা, সেই বিষয়ে খোঁজ চালানোই ছিল বিশেষ ওই যন্ত্রের কাজ। প্রাথমিক ইঙ্গিত যা পাওয়া গিয়েছে, তাতে রীতিমতো উৎসাহিত মহাকাশবিজ্ঞানী তথা প্ল্যানেটারি সায়েন্টিস্টরা। আজ যার রং মরচের মতো, ৩০০ কোটি বছর আগে সেই মঙ্গলগ্রহের চেহারা ছিল অনেকটাই অন্য রকম। এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, তাদের গণনা অনুসারে মঙ্গল পৃষ্ঠের প্রায় ১১.৫-২০ কিলোমিটার নিচে পাথরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে তরল পানি আটকে রয়েছে।ক্যালিফোর্নিয়া সান দিয়েগো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ক্রিপস ইনস্টিটিউশন অফ ওশানোগ্রাফির সমীক্ষার সহ-লেখক ডক্টর ভাসান রাইট বলেছেন, ইনসাইট ল্যান্ডার ইঙ্গিত দিচ্ছে মঙ্গলগ্রহকে খটখটে শুকনো বলে মনে করার কোনও কারণ নেই। মঙ্গলের মাটির ১১.৫ থেকে ২০ কিলোমিটারের মধ্যবর্তী গভীরতায় তরল অবস্থায় পানি পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।’
মঙ্গলের মাটির নীচে যে পানি রয়েছে- সে বিষয়ে যন্ত্রের তরফে ইতিবাচক ইঙ্গিত পাওয়ার পর গবেষকরা আলোচনা শুরু করেছেন সেই পানি পৌঁছনোর সম্ভাব্য কারণ নিয়ে।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের স্টিভেন ব্যানহাম যোগ করেছেন যে মঙ্গলের মধ্য-ভুত্বকের মধ্যে তরল পানি শনাক্ত করা ভূ-পদার্থবিদ এবং ভূতাত্ত্বিকদের মঙ্গল গ্রহের অভ্যন্তরীণ গঠন এবং এটি কীভাবে আচরণ করে তা বুঝতে সাহায্য করবে।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান