ধামরাই প্রতিনিধি : ধামরাইয়ে ছানোয়ার হোসেন নামে এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ চারজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ঘটনা উল্লেখ করে ধামরাই থানায় একটি জিডি করেন গোলাম নবী নামে এক ব্যক্তি। জিডির তদন্তে ঘটনাটি মিথ্যা প্রতীয়মান হওয়ায় জিডির বাদি গোলাম নবীকে আটক করে ধামরাই থানা পুলিশ। এ ঘটনায় জিডির বিবাদি নূরুল ইসলামের দায়ের করা চাঁদাবাজির মামলায় গোলাম নবীকে আজ শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ছানোয়ার হোসেন গাজীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত আছেন।
জানা গেছে, উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের বাঙ্গালপাড়া গ্রামের মমতাজ উদ্দিন আহমেদের ছেলে গোলাম নবী (৫২) গত বৃহস্পতিবার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের উত্তর দীঘল গ্রামের নুরুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান, ছানোয়ার হোসেনসহ চারজনের নামে ধামরাই থানায় একটি জিডি করেন (জিডি নং- ১২৭৯)। এ জিডিতে বিবাদিদের কাছে পাওনা টাকা দাবি করায় বাদিকে হত্যার হুমকির কথা উল্লেখ করা হয়।
শুক্রবার এ জিডির সরেজমিন গিয়ে তদন্ত করেন ধামরাই থানার এসআই পাভেল মোল্লা। তদন্তে গিয়ে জানতে পারেন জিডিতে উল্লেখিত ঘটনা মিথ্যা। পরে জিডির বাদি গোলাম নবীকে ধামরাই থানা পুলিশ আটক করে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করে আসছে গোলাম নবী। তার বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, গোলাম নবীর দায়ের করা জিডিতে উল্লেখ করা ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এছাড়া গোলাম নবী খারাপ প্রকৃতির লোক। চাঁদাবাজির মামলায় তাকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
এলাকাবাসী ও তদন্ত কর্মকর্তা এসআই পাভেল মোল্লার কাছ থেকে জানা গেছে, উত্তর দিঘল গ্রামের সামছুল হকের দুই ছেলে শরিফুল ইসলাম ও আরিফুল ইসলাম। শরিফুল ইসলাম প্রতিবেশী মনোয়ারা বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে দু’টি সন্তান রয়েছে। শরিফুল দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে আছেন। আর আরিফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী নাছরিন পুলিশ সদস্য। শরিফুলের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের সঙ্গে শ্বশুর সামছুল হক, দেবর আরিফুল ও দেবরের স্ত্রী নাছরিনের পারিবারিক কলহ চলছে। এর জেরে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর মনোয়ারা বেগম তার ভাবি রোকসানাকে বাদি করে আরিফুল ও আরিফুলের বাবার নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালতে একটি সিআর মামলা করেন। এ মামলাটি পিবিআই-এর তদন্তে মিথ্যা মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। পরবর্তীতে গত ৭ মে মনোয়ারা নিজেই বাদি হয়ে দেবর আরিফুলের বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণের মামলা করেন। এ মামলা দুটির পেছনে গোলাম নবীসহ একটি চক্র সক্রীয় ভূমিকা পালন করে। মামলা মিমাংসা করে দেওয়ার নামে আসামি ও তার পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে গোলাম নবী গং। এসবের বিরোধিতা করেন আরিফের চাচাতো ভাই নূরুল ইসলাম ও আব্দুল মান্নান মাস্টার (মান্নান মাস্টার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেনে আপন ভাই)।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) নূরুল ইসলাম, ছানোয়ার হোসেন, আব্দুল মান্নানসহ চারজনের নামে হুমকিসহ বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন গোলাম নবী। তবে মামলা হওয়ার আগে সামাজিকভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। সালিশে শরিফুলের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের মনোপূত না হওয়ায় দেবর আরিফুলের নামে মামলা করেন।