তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ডিএফপি’র মিডিয়া তালিকাভুক্ত ঢাকা জেলার একমাত্র স্থানীয় পত্রিকা

ফিলিস্তিনের কাছে আরেকটি হার বাংলাদেশের

- Advertisement -

ফুলকি ডেস্ক : যোগ করা সময়ের আট মিনিটের খেলা চলছিল। ম্যাচে তখন কোনও দলই গোল করতে পারেনি। ততক্ষণে ফিলিস্তিন ১০ জনের দলে পরিণত। কিন্তু সেই সুযোগ নেওয়ার আগেই ফিলিস্তিন গোল করলে বাংলাদেশের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ন্যূনতম পয়েন্ট নেওয়ার দিকে এগিয়ে গেলেও শেষ মুহূর্তে আবার গোল হজম করে আরেকটি পরাজয় নিয়ে বাংলাদেশ মাঠ ছেড়েছে। আর ফিলিস্তিন ১-০ গোলে স্বাগতিকদের হারিয়ে বাছাই পর্বে এগিয়ে গেলো আরও।

একাদশে দুটি পরিবর্তন রেখে শুরু থেকে ফিলিস্তিন বাংলাদেশকে চাপে রেখেছিল। নিজেদের মাঠে সেই চাপ সামলে মাঝে মধ্যে গোল দেওয়ার চেষ্টা ছিল রাকিব-ফাহিমদের। সফল হয়নি যদিও। বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে ফিলিস্তিনকে গোল করতে দেয়নি। প্রথমার্ধে তাদের আটকে রেখে ড্রেসিং রুমে গেছে স্বাগতিকরা।

কিংস অ্যারেনায় ফিলিস্তিন প্রায় বাম প্রান্ত দিয়ে আক্রমণ করেছে। এরিয়াল খেলে স্বাগতিকদের পরাস্ত করার চেষ্টা। উচ্চতা ও শারীরিক দিক দিয়ে এগিয়ে থাকায় সেই সুযোগে কিছু করার দিকে ঝোঁক ছিল তাদের। কিন্তু তপু-শাকিল-মিতুলরা দারুণ দক্ষতায় একের পর এক আক্রমণ নস্যাৎ করে দিয়েছে। বরং প্রতি আক্রমণে ওঠে সহজ সুযোগ নষ্ট করে আফসোস করতে হয়েছে রাকিব-ফাহিমদের। এছাড়া পাসে কিছুটা অ্যাকুরেসির অভাব অনুভূত হয়েছে। যার কারণে প্রতিপক্ষ বারবার বল পেয়েছে সহজে।

বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের দৃশ্য।ম্যাচঘড়ির ১২ মিনিটে মোহাম্মদ রাশিদের ফ্রি-কিক গোলকিপার মিতুল মারমা কোনোমতে ক্লিয়ার করেছেন। ২২ মিনিটে বাংলাদেশের ফাহিম ক্রস দিয়েছিলেন অন্য প্রান্তে। কিন্তু সেখানে কেউ ছিলেন না। থাকলে হয়তো সুযোগ ছিল কিছু করার।

৩০ মিনিটে রাকিবের ব্যাক পাস থেকে জনি বক্সে ঢুকেও লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি। দুই মিনিট পর প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে জামালের ফ্রি-কিক পোস্টের বাইরে দিয়ে গেলে হতাশ হতে হয় সমর্থকদের।

এরপর অতিথিদের দুটি প্রচেষ্টা গোলকিপার মিতুল দারুণ দক্ষতায় প্রতিহত করেছেন। ৩৫ মিনিটে ফিলিস্তিন আবারও আক্রমণ করেছে। আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা ওলে দাবাঘের শট মিতুল হাঁটু নিচু করে তালুবন্দি করেছেন। তিন মিনিট পর ফিলিস্তিন আবারও ভালো সুযোগ পায়। কিন্তু মুসাফ বাত্তাবের ফ্রি-কিক জেইদ কুনবারের হেড ফিস্ট করে ফেরান মিতুল।

৪৪ মিনিটে স্বাগতিকরা ম্যাচের সবচেয়ে ভালো সুযোগ নষ্ট করে। জামালের থ্রু থেকে বক্সের ভেতরে ফাহিমের শট আগুয়ান গোলকিপারের শরীরে লেগে প্রতিহত হয়েছে। ঠিক এরপরই রাকিব সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি।

বিরতির পর আগের গতিতে চলতে থাকে খেলা। শুরুর দিকে ফিলিস্তিন গোলের সুযোগ পেয়ে মিস করে আবারও। দায়টা অবশ্য স্বাগতিকদের রক্ষণের। ৪৮ মিনিটে ফিলিস্তিন ভালো সুযোগ নষ্ট করে। শাকিল হোসেনের ব্যাক পাস মিতুল ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি। বল পায়ে রেখে ক্লিয়ার করার আগেই তা ওলে দাবাঘ ফাঁকায় পেয়েও ঠিকমতো লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি। তার আগেই মিতুল প্রাচীর হয়ে আটকানোর চেষ্টা করেছেন। শেষ পর্যন্ত দাবাঘের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে গেছে।

তিন মিনিট পর রাকিবের ক্রসটি ফাহিম পাওয়ার আগেই গোলকিপার সরাসরি তালুবন্দি করে বিপদ হতে দেননি। ৫৭ ও ৬৫ মিনিটে ফিলিস্তিনের গোলের চেষ্টা সফল হতে দেননি মিতুল মারমা। ৭০ মিনিটে বাংলাদেশের একাদশে বদল আনে। জামালের জায়গায় মোহাম্মদ সোহেল রানা ও ফাহিমের বদলি নামে রফিকুল ইসলাম। ফিলিস্তিন এরপরও ৭৪ মিনিটে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছে। ওদে খারোবের শট মিতুল শুয়ে পড়ে রক্ষা করেছেন।

৮২ মিনিটে দুর্ভাগ্য হয়ে আসে মিতুল মারমার চোট। মাঠ ছাড়েন তিনি। তার জায়গায় মেহেদী হাসান শ্রাবণ মাঠে নামেন। যোগ করা সময়ে রাকিব গোলের চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সফল হতে পারেননি। বরং দ্রুত খেলা শুরুর জন্য রাকিবকে বাইলাইনের বাইরে টেনে নিয়ে যাওয়ার পর শুরুতে হলুদ কার্ড দেখেন আমিদ মাহাজনেহ। রেফারির সঙ্গে তর্কের পর এবার লাল কার্ডও দেখতে হয় তাকে। তাতে দশ জনের দলে পরিণত হয় ফিলিস্তিন। তারপরও দমে যায়নি তারা। ওই ঘটনার একটু পরই মিশেল তেরমানি দারুণ ফিনিশিংয়ে ফিলিস্তিনকে এগিয়ে নিয়েছেন। কর্নার থেকে ইসলাম বারতানের হেডে তেরমানির আনমার্কড থেকে গোল করতে কোনও সমস্যাই হয়নি। তাতে ২০০৬ সালের পর আবারও ফিলিস্তিনকে রুখে দেওয়ার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে স্বাগতিকদের।

- Advertisement -

এ বিভাগের আরও সংবাদ